তোমরা এখন নিচের কয়েকটি ক্ষেত্রে প্রতিসরণের বাস্তব প্রয়োগ দেখতে পাবে।
(১) একটি সোজা লাঠিকে কাত করে পানিতে ডুবালে উপর থেকে তাকালে পানির ভিতর লাঠির অংশটি কেমন দেখাবে। পর্যবেক্ষণ করে দেখ লাঠিটি ছোট, মোটা এবং উপরে দেখা যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। আসলে প্রতিসরণের ফলে এমন হচ্ছে। চিত্র অনুসারে এখানে ঘন মাধ্যম পানি থেকে আলো প্রতিসরিত হয়ে হালকা মাধ্যমে তোমার চোখে প্রতিফলিত হচ্ছে। লাঠিটির নিমজ্জিত অংশের প্রতিটি বিন্দু উপরে উঠে আসে। ফলে লাঠিকে খানিকটা উপরে, দৈর্ঘ্যে কম এবং মোটা দেখায়।
(২) একটি স্টিলের মর্গ বা চিনামাটির বাটি নাও। এরপর মা বা বাটিতে একটি মুদ্রা রাখ। এখন তোমার চোখকে এমন স্থানে রাখ যেন তুমি মুদ্রাটিকে দেখতে না পাও। এবার অন্য একজনকে ধীরে ধীরে মা বা পাত্রে পানি ঢালতে বলো। কী হবে এবং কেন হবে তা বলতে পারবে? পর্যবেক্ষণ করে দেখবে আস্তে আস্তে ভূমি মুদ্রাটিকে দেখতে পাবে। এটি প্রতিসরণের ফলে সম্ভব হয়েছে। অর্থাৎ প্রতিসরণের ফলে আলো ঘন মাধ্যম পানি থেকে হালকা মাধ্যম বায়ুতে তোমার চোখে প্রতিসরিত হওয়ায় তুমি মুদ্রাটির অবাস্তব প্রতিবিম্ব দেখতে পাচ্ছ।
(৩) তুমি কি কখনো মাছ শিকার করেছ? সাধারণত পানিতে যে জায়গায় মাছটি দেখা যার আসলে কি মাছটি ঐ জায়গায় থাকে? মোটেই না? আসলে যে মাছটি আমরা দেখি এটি হলো তার অবাস্তব প্রতিবিম্ব। প্রকৃতপক্ষে মাছ থাকে আরেকটু দূরে এবং পতীরে। যদি ভূমি চেঁটা বা কোচ দিয়ে মাছ মারতে চাও তাহলে এটিকে মারতে হবে আরও নিচে ও দূরে।
(৪) তুমি নিশ্চয়ই বর্ষাকালে দেখেছ যে পুকুর ঘাট পানিতে তলিয়ে যায়। বর্ষার স্বচ্ছ পানির জন্য পুকুর ঘাটের সিঁড়িটা কোথায় দেখা যায় ? আসলে এটিকে যেখানে দেখা যায় এটি থাকে তার চেয়ে একটু নিচে। ফলে অনেকেই বুঝতে না পেরে পড়ে যায়। এমন ঘটনা আরও দেখতে পাবে তোমরা যদি সেন্টমার্টিন দ্বীপের পাশে অবস্থিত ছেঁড়া দ্বীপে বেড়াতে গিয়ে থাক। ওখানকার স্বচ্ছ পানিতে নিচের পাথর ও শৈবাল অনেক কাছে মনে হয়। এটা হয় মূলত আলোর প্রতিসরণের জন্যই।
আরও দেখুন...